সরস্বতীর আরাধনা হয় প্রায় বেশিরভাগ হিন্দু বাড়িতে। কিন্তু সরস্বতী মন্দির কিন্তু বিশেষ দেখা যায় না। বাংলায় অনেক দেব দেবীর পুজো করা হয় যাদের মন্দিরও রয়েছে। অর্থাৎ তারা মন্দিরেও পূজিত হন। বাংলায় ঘরে ঘরে সরস্বতী পুজো হয়ে থাকলেও সরস্বতী মন্দির খুব কম আছে যেখানে দেবী সরস্বতীর নিত্য আরাধনা হয়। কিন্তু এই বাংলাতেই আছে এমনই এক দেবী সরস্বতীর মন্দির, যেখানে মা সরস্বতী নিত্য পূজিত হন। এই সরস্বতী মন্দিরটি অবস্থিত হাওড়ার পঞ্চানন তলায়। উমেশ চন্দ্র দাস লেনের এই সরস্বতী মন্দিরে মা সরস্বতীর নিত্য আরাধনা করা হয়। এই এলাকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে কিন্তু ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের ইতিহাস। যেখানে এই মন্দিরটি অবস্থিত সেই মন্দিরের গলির ঠিক পাশে রয়েছে ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতি পার্ক। ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র যখন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হয়েছিলেন তখন তিনি পঞ্চানন তলার বাড়িতে বেশ কয়েক বছর ছিলেন।
সাহিত্য সম্রাট ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের সঙ্গে সেই সময় রবীন্দ্রনাথ সহ বাংলার অনেক বিখ্যাত মনীষীরা এই বাড়িতেই দেখা করতে আসতেন। প্রাচীন এই মন্দিরের চূড়ায় রয়েছে পিতলের ত্রিশূল তবে এই ত্রিশুলওয়ালা চূড়া আর সেভাবে দূর থেকে দেখা যায় না কারণ বড় বড় বাড়ির আড়ালে তা ঢাকা পড়ে গেছে। প্রাচীন এই মন্দিরের দেয়াল হাঁস ও বীণা দ্বারা সজ্জিত। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা হয় ১৯২৩ সালের জুন মাসে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার দিনে। সেই হিসেবে দেখতে গেলে এই মন্দির শতবর্ষ প্রাচীন। দাস পরিবারের সদস্য অমলেন্দু দাসের বয়ান অনুসারে তার দাদু রণেশ চন্দ্র দাস ছিলেন পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার। তিনি কর্মসূত্রে রাজস্থানে ছিলেন। ওখান থেকে ফেরার সময় তিনি জয়পুর থেকে মা সরস্বতীর চার ফুটের শ্বেত পাথরের এই মূর্তি এনেছিলেন। বসন্ত পঞ্চামীতে বিশেষ পুজো তো হবেই, তাছাড়াও এখানে নিত্য পুজোর ব্যবস্থা আছে।