বাংলার অন্যতম তীর্থস্থান তারাপীঠ মন্দির। প্রতি বছর দেশ বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ এখানে আসে পুজো দিতে। অমাবস্যা ও অন্যান্য কয়েকটি তিথিতে তারাপীঠ মন্দিরে প্রবল ভিড় হয়। কখনো কখনো তা নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। এই অবস্থায় মন্দিরের ট্রাষ্টিবোর্ড নতুন কিছু নিয়মের প্রবর্তন করেছেন। ভোরে গর্ভগৃহ খোলার পর প্রথম একঘণ্টা সাধারণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা পুণ্যার্থীদের পুজো গ্রহণ করা হবে। বিশেষ লাইনে পুজো দিতে হলে মন্দির কমিটির অফিস থেকে কুপন সংগ্রহ করতে হবে। কৌশিকী অমাবস্যায় সময় এখানে তিলধারণের জায়গা থাকে না। তবে চলতি বছরে বদলে গেল তারাপীঠের বেশ কিছু নিয়ম। আর নতুন নিয়ম চালু হল পৌষ মাসের একেবারে প্রথম দিন থেকেই।
কিছুদিন ধরেই তারাপীঠ মন্দিরে চরম বিশৃঙ্খলা চলছিল। মোটা টাকার বিনিময়ে মিলছিল দেবীর দর্শন। তাই সাধারণ লাইনের পুণ্যার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। আবার তেমনই পালাদার সেবাইতদের একাংশ মন্দিরটাকে নিজস্ব সম্পত্তি ভেবে কাজ করছিল। নির্দিষ্ট কোনও সময় মানা হচ্ছিল না পুজো অর্চনার। তাদের ইচ্ছেতেই গর্ভগৃহ খোলা–বন্ধ হচ্ছিল।
মন্দিরের শৃঙ্খলা ও ভিড় নিয়ন্ত্রনের জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষ নতুন কিছু নিয়ম চালু করেছেন।
যেমন –
১) নির্দিষ্ট সময় মন্দির খুলতে হবে এবং বন্ধ করতে হবে, দু’টি লাইন পুজোর জন্য রাখতে হবে। অতিরিক্ত লাইন করা যাবে না।
২) মন্দিরের গর্ভগৃহের ভিতরে গোলাপ জল–আলতা বন্ধ।
৩)প্রতিমার চরণ স্পর্শ করা যাবে। প্রতিমাকে জড়িয়ে ধরা যাবে না।
৪) মন্দিরে মোবাইল নিয়ে ঢোকা যাবে না। নির্দিষ্ট জায়গায় জমা রেখে আসতে হবে।
৫) নারকেল ফাটানো নিষিদ্ধ।
এই বিষয়ে মন্দিরের সেবাইত বলেন, ‘ভক্তদের জন্যই তারাপীঠ। তাঁদের যাতে সুবিধা হয় তাই যৌথ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি, সহ–সভাপতি এবং সেবাইতদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক করেন এখানের জেলাশাসক। ওই বৈঠকে মন্দিরের নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এইসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।