এটি অন্যতম একটি মহাশক্তি পীঠ হিসেবে বিবেচিত।
আগামী ২৩- ২৫ শে সেপ্টেম্বর অর্থাৎ শনি রবি ও সোমবার তিন দিনের জন্য বীরভূমের বক্রেশ্বর শিব ক্ষেত্রের বাবা বক্রেশ্বরের গর্ভগৃহ সংস্কারের জন্য বন্ধ থাকবে। ওই তিন দিন ভক্তরা শিব মন্দিরের গর্ভ গৃহে ঢুকতে ও পূজা পাঠ করতে পারবেন না। আগামী ২৭ শে সেপ্টেম্বর থেকে অর্থাৎ সামনের বুধবার থেকে ভক্তরা পুনরায় গর্ভ গৃহে প্রবেশ করতে পারবেন এবং পূজা পাঠ করতে পারবেন। তবে বক্রেশ্বর শিব ক্ষেত্রের অন্যান্য মন্দিরের গর্ভগৃহ খোলা থাকবে। বক্রেশ্বর মন্দির ও উন্নয়ন কমিটির সদস্য তথা সেবাইত দেবনাথ মুখার্জি একান্ত সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত বিবরণ দেন।
বাবা ভোলানাথ এখানে ভৈরবনাথ নামে প্রতিষ্ঠিত । পাশেই রয়েছে সতী পীঠ । রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই মেলায় আসেন । মেলার বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে । জানা গিয়েছে, এখানে ভোলানাথের পাঁচটি মূর্তি রয়েছে । শিবরাত্রির দিন মূর্তিগুলি বের করা হয় । ওইদিন মূর্তিগুলি নিয়ে বক্রেশ্বর গ্রাম প্রদক্ষিণ করা হয় । তারপর পর শুরু হয় শিবরাত্রির পুজো । সরকারিভাবে তিনদিনের মেলা হলেও চলে এক সপ্তাহ । লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। তাই মেলাকে ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে ।

কথিত আছে, মহাভারতের (Mahavarat) সময়কাল থেকে এই মেলা চলে আসছে । অষ্টবক্র মুনি নাকি তাঁর শারীরিক অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এই বক্রেশ্বর ধামে এসেছিলেন । সেখানেই বাবা ভোলানাথের (Siva) দর্শন পেয়ে তিনি মুক্তি লাভ করেন । তারপরেই বাবা ভোলানাথকে ভৈরবনাথ নামে এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় । সেই থেকেই মেলা চলে আসছে ।
বক্রেশ্বর (Bakreswar) শব্দটি লোকালয়ে পূজা করা শিবের (Siv) নাম থেকে এসেছে। বক্র অর্থ বাঁকানো বা বাঁকা। পৌরাণিক কথায় বলা হয় যে লক্ষ্মী (Maa Laxmi) ও নারায়ণের (Narayan) বিবাহ অনুষ্ঠানের সময় সত্যযুগে অষ্টবক্র মুনি (তত্কালে সুব্রত মুনি নামে পরিচিত) ইন্দ্রের দ্বারা অপমানিত হয়েছিলেন। মুনি এতটাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন যে তিনি তাঁর দেহে ৮ টি পঙ্গু বিকশিত করেছিলেন (অষ্টবক্র মুনি মানে ৮ টি বাঁকা পঙ্গুযুক্ত ঋষি)। অষ্টাভাক্র মুনি এখানে বহু বছর তাপস্যা (ধ্যান) করার পরে ভগবান শিবের দ্বারা আশীর্বাদ পেয়েছিলেন। এই স্থানটি ৫১ টি শক্তি পিঠগুলির মধ্যে একটি হিসাবেও বিখ্যাত, যেখানে আদি শক্তিকে উত্সর্গীকৃত একটি মন্দির রয়েছে। এটি হিন্দুদের একটি প্রধান তীর্থস্থান।
দেবী সতীর (Devi Sati) ভ্রূযুগলের মধ্যবর্তী অংশ বা তার মন এই অঞ্চলে পতিত হয়েছিলেন যখন ভগবান বিষ্ণু, শিব বিহীন দক্ষ যজ্ঞে স্বেচ্ছায় প্রান বিসর্জনকারিনী সতীর দেহ সুদর্শন চক্র দিয়ে খণ্ডিত করেছিলেন।খণ্ডিত অংশগুলি পরে এক একটি মন্দিরে পরিণত হয় ও শক্তিপীঠে পরিণত হয়। দেবী এখানে মহিষমর্দিনী।ভৈরব বক্রনাথ। কথিত আছে সত্যযুগে লক্ষ্মী ও নারায়ণএর বিয়েতে সুব্রত মুনিকে ইন্দ্র অপমান করেন।রাগে ঋষির দেহ আট বাঁকে বেঁকে যায়। তিনি অষ্টাবক্র ঋষি নামে পরিচিত হন। মহামুনি অষ্টাবক্র এখানে শিবের তপস্যা করেন ও পাপহরা নদীতে স্নানের পর পাপমুক্ত হন।তার নামে তাই মহাদেবের নাম এখানে বক্রেশ্বর বা বক্রনাথ।
এটি অন্যতম একটি মহাশক্তি পীঠ হিসেবে বিবেচিত।