ভক্তিযোগে ঈশ্বরে আরাধনার অন্যতম উদাহরণ সাধক বামাক্ষেপা। তাঁর জীবনে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যা সাধারণ বুদ্ধি দিয়ে বিচার করা যায় না। তেমনই একটি ঘটনার কথা আজ উল্লেখ করবে।
খুব অল্প বয়সে বামাক্ষেপা বাবাকে হারান। তাঁর সংসারের টান বলতে শুধুই ‘মা’ আর ছোট ভাই। এদিকে বামা শ্মশানে মশানে ঘুরে বেড়ায়। সংসারের দিকে লক্ষ নেই। এমন সময় হঠাৎ তাঁর মাতৃবিয়োগ ঘটে। বামা খুবই ভাঙে পারেন। শ্মশানে গিয়ে ধ্যানে বসেন। এমন সময় তার ভাই এসে বলেন, মায়ের শ্রাদ্ধর কাজ তো করতে হবে দাদা। দাদাও বলেন, হ্যাঁ, করতে তো হবেই। মায়ের কাজ বলে কথা। তুই এক কাজ কর পাড়ার লোকদের নিমন্ত্রণ কর আর বেশ কয়েকজন ব্রাহ্মণকে আপ্যায়ান করবি।
ভাই রামচরণের মাথায় হাত। সে খুবই দরিদ্র। টাকা পাবে কোথায়! বামা বলেন, তুই ব্যবস্থা করতে থাক। মা তারার আশীর্বাদে সব হয়ে যাবে। অবাক হয়ে ভাই বাড়ির সামনের জায়গা পরিষ্কার করে ম্যারাপ বাঁধার জন্য। গ্রামের লোকেরা তো হাসাহাসি করছে। ভাই সবাইকে নিমন্ত্রণও করেন।
এবার শ্রাদ্ধের দিন হঠাৎ ভাই দেখে দূর দূরান্ত থেকে বামাক্ষেপার শিষ্যরা দলে দলে আসছে আর শ্রাদ্ধের উপকরণ দিয়ে যাচ্ছে। মুহূর্তে শুরু হয়ে গেলো রান্না। বেলা গড়িয়ে যায় কিন্তু বামাক্ষেপার দেখা নেই। পুরোহিত চিন্তিত। হঠাৎ বামা এসে উপস্থিত।
আর ঠিক তখনই সমস্ত আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। শুরু হয় মেঘ গর্জন। ভাই বলে, দাদা কি হবে এবার? বামা বলেন, মা তারা সব ঠিক করে দেবেন। বলেই তিনি মেঘ গর্জন থেকেও উচ্চ নাদের শুরু করেন মায়ের শ্রাদ্ধর মন্ত্র পাঠ। আশ্চর্যের ঘটনা হলো সেদিন আশেপাশের সমস্ত গ্রামে প্রবল বৃষ্টি হলেও তাঁদের গ্রাম ‘আলায়’ কিন্তু এক ফোঁটাও বৃষ্টি হয় নি। অতিথি আপ্যায়ান ও ব্রাহ্মণভোজন সহ সমস্ত শ্রাদ্ধর কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছিল।