আজ বিপত্তারিণী পুজো (Bipadtarini Puja)। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, আষাঢ় মাসের রথ থেকে উল্টোরথের মধ্যে মঙ্গলবার ও শনিবার-এ হিন্দু মহিলারা বিপত্তারিণী ব্রত (Bipadtarini Vrat) পালন করা হয়। দেবী দুর্গার (Godess Durga) অন্যতম রূপ হলেন দেবী বিপত্তারিণী।
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, যে কোনও বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই দেবীর পুজো করা হয়। যিঁনি সমগ্র বিপদ থেকে রক্ষা করেন বা যিঁনি বিপদ সমূহ নাশ করেন তিনিই বিপত্তারিণী।
শাস্ত্র মতে, দুর্গার ১০৮টি অবতারের মধ্যে অন্যতম হলেন দেবী সঙ্কটনাশিনী। তাঁর একটি রূপ হলেন মা বিপত্তারিণী।চলতি বছরের ২ তারিখ শনিবার ও ৫ তারিখ মঙ্গলবার ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে বিপত্তারিণী পুজো। গ্রামাঞ্চলে বিপত্তারিণী পূজা চারদিন ধরে চলে। প্রথম দিনে দেবীর “আরাধনা” (পূজা) করা হয়। বিপত্তারিণী পূজা উপলক্ষে মেয়েরা উপবাস করে। প্রথা অনুসারে হাতে “তাগা” (এক গুচ্ছ পবিত্র লাল সুতো ও দূর্বাঘাস) বাঁধা হয়।
বিশ্বাস করা হয় যে, এই তাগা হাতে পরলে তাঁকে কোনও বিপদ স্পর্শ করতে পরে না। বিপত্তারিণী পুজোর শেষে সকলেই হাতে ওই তাগা বেঁধে দেওয়া হয়৷ মেয়েরা বাম হাতে ও ছেলেরা ডান হাতে এটি পরেন। এটি শুধু ব্রত পালন যিনি করছেন তিনিই যে বাঁধেন তা নয় পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাঁধেন বিপন্মুক্তির জন্য। বিশ্বাস করা হয় যে সংসার ও সন্তানদের জন্য এই ব্রত পালন করেন তারা৷ এই ব্রতর ফলে কেটে যায় সমস্ত বিপদ।
পৌরাণিক কাহিনি

পুরাণে কৌশিকীদেবী নামে খ্যাতা। আবার তিনিই জয়দুর্গা। দেবীর উৎপত্তি হয়েছিলো পরমেশ্বর ভগবান শিবের অর্ধাঙ্গিনী দেবী পার্বতীর কৃষ্ণ কোশ থেকে- তাই তিনি কৌশিকী। পুরাণ মতে শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামক দুই অসুরের হাতে দেবতারা পরাজিত হয়ে হিমালয়ে গিয়ে মহামায়ার স্তব করতে লাগলেন।
সেই সময় পরমেশ্বরী ভগবতী পার্বতী সেই স্থান দিয়ে যাচ্ছিলেন। দেবী তাদের স্তব শুনে বললেন –”আপনারা এখানে কার স্তব করিতেছেন?” সেই সময় ভগবতী পার্বতীর শরীর থেকে তার মতন দেখতে আর এক জন দেবী বের হয়ে আসলেন। সেই নব আবির্ভূতা দেবী জানালেন – “ইহারা আমারই স্তব করিতেছেন।” এই দেবী যুদ্ধে শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামক অসুরের বধ করেছিলেন।
এই দেবী মোহাচ্ছন্ন শুম্ভাসুরকে অদ্বৈত জ্ঞান দান করে বলেছিলেন, “এই জগতে এক আমিই আছি। আমি ছাড়া আমার সাহায্যকারিনী আর কে আছে? ওরে দুষ্ট ভাল করে দেখ , ব্রহ্মাণী প্রভৃতি শক্তি আমারই অভিন্না বিভুতি বা শক্তি। এই দেখ তারা আমার সঙ্গে মিশে যাচ্ছে।”
একটি পৌরাণিক (Mythology) গাঁথানুসারে একদা ভগবান মহাদেব রহস্যচ্ছলে দেবী পার্বতীকে ‘কালী’ বলে উপহাস করেন। এতে দেবী ক্রুদ্ধ হয়ে তপস্যার মাধ্যমে নিজের “কৃষ্ণবর্ণা” রূপ পরিত্যাগ করলেন। সেই কৃষ্ণবর্ণা স্বরূপ দেবীই হলেন, দেবীর পার্বতীর অঙ্গ থেকে সৃষ্টা জয়দুর্গা, কৌশিকীদেবী ও বিপদতারিনীদুর্গা।
জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে মঙ্গল ও শনিবারে মায়ের পূজা হয়। যেখানে ১৩ প্রকার ফল, পুস্প, মিষ্টি, পান, সুপারী, লবঙ্গ, এলাচ প্রভৃতি অর্পণ করা হয়। তবে, বাংলাদেশে দেবীর পূজার নিয়ম বিধি সম্পূর্ণ আলাদা।
বিপত্তারিণী পুজোর (Bipadtarini Puja 2023) দিন যে যে ভুলগুলি একেবারেই করবেন না, সেগুলি একবার দেখে নিন…
– আপনি যদি বিপত্তারিণী পুজো করেন, তাহলে পুজোর আগে ও পরের দিন আমিষ খাওয়ার নিয়ম রয়েছে।
– পুজো চলাকালীন পরিবারের কোনও সদস্যের সঙ্গেই কথা বলা চলবে না। মুখ থেকে একটি টু শব্দ খসলেই ক্রুদ্ধ হোন দেবী বিপত্তারিণী।
– পুজোর দিন কোনও আঁশ-জাতীয় খাবার ঘরে প্রবেশ করবেন না
– চাল ও গমের কোনও খাদ্যবস্তু ভুলে মুখে তুলবেন না।
– এই দিন কোনও মহিলার সঙ্গে বাজে ভাবে ব্যবহার বা বাজে কথা বলবেন না। শুধু মহিলাই নয়, কারোর সঙ্গে বাজে কথা বলবেন না। অপমান বা আঘাত লাগে এমন বাক্য উচ্চারণ করবেন না।
– পুজোর আগে পুজোর ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখতে হয়। নিজেকেও পরিস্কার রাখতে স্নান সেরে নতুন পোশাক পরতে পারেন।
– ১৩ প্রকার ফল, পুস্প, মিষ্টি, পান, সুপারী, লবঙ্গ, এলাচ প্রভৃতি অর্পণ করতে হয়।
-দেবী ভগবতী বা দেবী কালী শুধু জবা ফুলেই তুষ্ট থাকেন, তাই মায়ের পুজোয় লাল জবা অতি আবশ্যক, লাল জবা ফুলের পুষ্পাঞ্জলি দ্বারাই মায়ের পুজো সম্পন্ন হয়
– দেবীর অনেক রূপ দেখা যায়। অষ্টাদশ রূপের ধ্যান ও পূজা হয়, কোথাও দশভুজা রূপে পূজা হয়, কোথাও আবার চতুর্ভুজা স্বর্ণ বর্ণা আবার কোথাও কৃষ্ণ বর্ণা রূপে পূজিতা হয় ।
– প্রসাদ হিসেবে ১৩টি লুচি ও ১৩ রকমের ফল খাওয়ার চল রয়েছে।
– বিপত্তারিণী পুজোয় ১৩ সংখ্যার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। স্বামী ও সন্তানের রক্ষার্থে ১৩টি গিঁট দেওয়া লাল সুতো যা রক্ষা সুতো নামে পরিচিত, তা হাতে বেধে দিতে হয়। তাতে ১৩টি দুর্বাও দেওয়া থাকে।
– দেবীর রূপ কালাভ্র আভাং, কটাক্ষে শত্রুকূলত্রাসিণী, কপালে চন্দ্রকলা শোভিতা, চারি হস্তে শঙ্খ, চক্র, খড়্গ ও ত্রিশূল ধারিণী, ত্রিনয়না, সিংহোপরি সংস্থিতা, সমগ্র ত্রিভুবন স্বীয় তেজে পূর্ণকারিণী, দেবগণ-পরিবৃতা।

মহিলারা কেন পালন করেন
বারো মাসে যত ব্রত আছে, তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বিপত্তারিণী ব্রত (Bipadtarini Vrat)। এই ব্রত পালন করলে জীবনে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বজায় থাকে। শ্রী শ্রী নারদমুনি দেবাদিদেব মহাদেবকে জিজ্ঞাসা করায় উত্তর পেয়েছিলেন, আমাদের বিভিন্ন রূপের পুজো করা দেব-দেবীর মধ্যে এই ‘দুর্গে দুর্গতি নাশিনী অভয়বিনাশিনী বিপদতারিণী মা দুর্গে’, এই মা দুর্গারই একটা রূপ বিপত্তারিণী’।
যে নারী ভক্তিভরে এই ব্রত পালন করেন, ভবসুন্দরী তার সব বিপদ দূর করেন। সে নারীকে কখনও বৈধব্য যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় না। মামলা, মোকদ্দমা, বিরহ যন্ত্রণা ইত্যাদি সকল বিপদ থেকে মা উদ্ধার করেন।
গ্রামাঞ্চলে বিপত্তারিণী পূজা চারদিন ধরে চলে। প্রথম দিনে দেবীর “আরাধনা” (পূজা) করা হত। মেয়েরা দণ্ডী কাটে। তারপর দুই রাত্রি ধরে রাতে বাংলা লোকগান, ভজন ও কীর্তন চলে। চতুর্থ দিনে বিসর্জন হয়। বিপত্তারিণী পূজা উপলক্ষে মেয়েরা উপবাস করে। প্রথা অনুসারে হাতে এক গুচ্ছ পবিত্র লাল সুতো ও দূর্বাঘাস বাঁধে।
ব্রতের উপকরণ:
ব্রতপালনের উপকরণ সামান্য। পুজোর উপকরণের পুষ্প, ফল, ইত্যাদি। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে এই সবকিছুই ১৩টি করে নিবেদন করতে হয়। হাতে ধারণ করার লালসুতোটিতেও ১৩টি গাঁট দেওয়ার বিধান রয়েছে। ঘট‚ আমের পল্লব‚ শীষ সমেত ডাব‚ একটি নৈবেদ্য‚ তেরো রকম ফুল, তেরো রকম ফল (আনারস নয় ভাগ করে অবশ্যই)‚ দু ভাগে কাটা তেরো রকম ফল। আলাদা চুবড়়িতে তেরোটা গোটা ফল‚ তেরো গাছি লালসুতো‚ তেরোটি দুর্বা‚ তেরোটি পান ও তেরোটি সুপুরি দিতে হয়। তেরো গাছি লাল কস্তাসুতো, তেরোটি পৈতা, তেরোটি লবঙ্গ, তেরোটি ছোট এলাচ, তেরোটি বড় এলাচ এবং পুজোর শেষে পুরোহিতকে যথাসাধ্য দান-ধ্যান ও দক্ষিণা দিতে হয় এবং পুজোর শেষে মন দিয়ে ব্রত কথা শুনতে হবে।
বিপত্তারিণী ব্রতের মন্ত্র:
মাসি পূণ্যতমেবিপ্রমাধবে মাধবপ্রিয়ে। ন বম্যাং শুক্লপক্ষে চবাসরে মঙ্গল শুভে। সর্পঋক্ষে চ মধ্যাহ্নেজানকী জনকালয়ে। আবির্ভূতা স্বয়ং দেবীযোগেষু শোভনেষুচ।নমঃ সর্ব মঙ্গল্যেশিবে সর্বার্থসাধিকে শরণ্যে ত্রম্বক্যে গৌরী নারায়ণী নমস্তুতে।।
বিপত্তারিনী ব্রত পালনের নিয়ম
১. ব্রতের আগের দিন নিরামিষ খাবার খেতে হয়।
২. ব্রতের দিন ফুল, মিস্টি, তেরটি লুচি, খেয়ে উপবাস ভাঙতে হয়।
৩. পূজা দিতে হয় তেরো প্রকার ফল আর তোরো প্রকার ফুল দিয়ে।
৪. লাল সুতোয় তেরোটি গাঁট ও আট পাতার দুর্বা (অষ্টদুর্বা)দিয়ে বেঁধে একটা ডুরি তৈরি করে মেয়েদের বাম হাতে ও ছেলেদের ডান হাতে বাঁধতে হয়। এটাকে সবাই মনে করেন বিপদে রক্ষাকবচ।
৫. যজমানেরা সাধ্যমতো দানদক্ষিণা দেন পুজারী ব্রাহ্মণকে।
৬. প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লা তৃতীয়া থেকে নবমী (Spirituality) তিথির মধ্যে যে কোনও শনিবার বা মঙ্গলবার এই ব্রত পালন করা হয়।
৭. এই ব্রত শুরু করলে তিন বছর, পাঁচ বছর, নয় বছর পালন করা উচিত।
৮. ব্রতের আগের দিন নিরামিষ বা একবার হবিষ্যান্ন গ্রহণ করা উচিত।
৯. দেবী ভগবতী শুধু জবা ফুলেই তুষ্ট থাকেন, তাই মায়ের পুজোয় লাল জবা অতি আবশ্যক, লাল জবা ফ,লের পুষ্পাঞ্জলি দ্বারাই মায়ের পুজো সম্পন্ন হয়
১০. এই ব্রতর প্রভাবে পূজারি ব্রাহ্মণকে (Spiritual) দিয়ে ঘট স্থাপন করে হলুদ সুতো দিয়ে দুর্বা-সহ ঘটের মুখে বাঁধতে হয়। তারপর স্বস্তিবাচন করে নামগোত্র ধরে সংকল্প সৃক্ত উচ্চারণ করতে হবে। অঙ্গশুদ্ধি, করশুদ্ধি করে পঞ্চদেবতার পাদ্যার্ঘ দিয়ে পুজো করতে হবে বিপত্তারিণী রূপী দুর্গার।
বিপত্তারিণী ব্রত কথা – পুরকালে নারদ ঋষি বেড়াতে বেড়াতে একদিন কেলাস -এ গিয়া উপস্থিত হলেন । সেখানে শিব ও দুর্গা কে প্রণাম করে জিজ্ঞাসা করলেন, – ”প্রভু , আপনিতো মঙ্গল ময় আর সব রকম মঙ্গল এর কারণ , এখন বলুন তো , কি ব্রত করলে মানুষ সন রকম বিপদ থেকে মুক্তি পেতে পারে ?”
নারদের কথা শুনে মহাদেব বললেন, “যে স্ত্রীলোক বিপত্তারিণীর ব্রত করে, সে সব রকম বিপদ থেকেই উদ্ধার পায়।” নারদ জিজ্ঞাসা করলেন, “পূর্বে এই ব্রত কে করেছিলেন , তার নিয়ম কি এবং ফল কি অনুগ্রহ করে আমাকে বলুন।”
নারদের এই কথা শুনে মহাদেব বললেন, “পুরকালে বিদর্ভ রাজ্যে এক সত্য নিষ্ঠা রাজা ছিলেন। তার স্ত্রীও ছিলেন নানা গুনে সম্পন্ন। ঘটনা চক্রে একদিন চমারের বউয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
লুকিয়ে লুকিয়ে তারা অনেক জিনিসপত্র দেওয়া নেওয়া করতে লাগলো। একদিন দুজনের নানা কথাবার্তা বলার মাঝখানে রাণী বললেন কখনো গোমাংস আমি দেখিনি তুমি একটু গোমাংস আমাকে লুকিয়ে এনে দিতে পারো ?
এরপরে রাণীর কথামত চামর বউ একদিন একটু গোমাংস বেশ ঢাকাঢুকি দিয়ে এনে রানীকে দিয়ে গেল। রণীও সেটা নিজের ঘরে ঘরে লুকিয়ে রাখলেন। ক্রমে কথাটা রাজার কানে গিয়ে উঠল এবং রাজা খুবই রেগে গেলেন।
পরক্ষণেই তিনি অন্তঃপুরে গিয়ে রানীকে বললেন “তোমার ঘরে তুমি কি লুকিয়ে রেখেছ শিগগির আমাকে দেখাও। তা নাহলে তোমার গর্দান যাবে।”
রাজার রাগ দেখে রাণীর খুব ভয় হল। কাঁপতে কাঁপতে রাণী বললেন আমার ঘরে নানা রকম ফলমূল আছে প্রভু।” রাজাকে এইকথা বলার পর রানি ঘরে ঢুকে মনে মনে মা দুর্গাকে খুব ডাকতে লাগলেন। রাণী মনে মনে বললেন, “মা বিপত্তারিণী !
আমি আজ খুব বিপদে পড়েছি , আমাকে আশ্রয় দাও মা, এ বিপদ থেকে উদ্ধার মা, আমি সারা জীবন তোমার ব্রত পালন করব।” রাণীর প্রার্থনায় দেবী সন্তুষ্ট হয়ে অভয় দিয়ে বললেন, তোমার স্তবে আমি সন্তুষ্ট হয়েছি, তোমার ঘরে যা ছিল সেটা এখন ফলমূল হয়ে গেছে।
তুমি এখন সেগুলো রাজাকে গিয়ে দেখাও, রাজা খুবই সন্তুষ্ট হবেন।” মা দুর্গার কথা মত রাণী ঘরে গিয়ে দেখলেন যে চুপড়িতে গোমাংশের বদলে রয়েছে একরাশ ফলমূল। রাণী তখন সব এনে রাজাকে গিয়ে দেখালেন আর রাজও খুবই সন্তুষ্ট হলেন। ক্রমেই রাণী ও ঐ ব্রত করতে লাগলেন ও অনেক সুখ লাভ করে দেহ ত্যাগের পর সর্গে চলে গেলেন।
বিপত্তারিণীর ব্রতের ফল – এই ব্রত করলে সংসারে কোন বিপদ আপদ থাকেন। মা বিপত্তারিণী তাকে সকল বিপদ থেকে উদ্ধার করেন।
(collected)