দোর গোড়ায় উপস্থিত বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদীয়া উৎসব। বাঙালি সারা বছর এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করেন। এই পূজার এক অন্যতম অনুষঙ্গ পুষ্পাঞ্জলি। দেবী দুর্গাকে পরমা প্রকৃতি ও সৃষ্টির আদি কারণ বলে মনে করা হয়। তিনি শিবের স্ত্রী পার্বতী, কার্তিক ও গণেশের জননী, কালীর অন্যরূপ। বাংলা মঙ্গলকাব্যে এবং আগমনীগানে শিবজায়া হিমালয়দুহিতা পার্বতীর কথা আছে। রয়েছে তাঁর বিবাহিত জীবনের বর্ণনা। রয়েছে সপরিবার পিতৃগৃহে অবস্থানের আনন্দময় দিনগুলির কথাও। এই দিনগুলি মা দুর্গা যেন আমাদের ঘরে অবস্থান করেন। তাই আমরাও শুদ্ধ কাপড় পরে দুর্গার অঞ্জলি দিয়ে থাকি। অঞ্জলি আসলে দেবীর কাছে নিজেকে অর্পণ করা। দেবীর কাছে আমাদের প্রার্থনা পৌঁছে দেওয়া।
এই পুষ্পাঞ্জলি নিয়ে ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের মধ্যে দ্বিমত আছে। অনেকেই তিনদিন একই মন্ত্র পাঠ করান। কিন্তু হিন্দু পুরানে বলা আছে, সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে অঞ্জলির মন্ত্র আলাদা। আমরা অধিকাংশ পুরান অনুযায়ী তিন দিনের অঞ্জলি মন্ত্রের প্রথম অংশটি এখানে উল্লেখ করছি –
সপ্তমী মন্ত্রের প্রথম অংশ –
- নমঃ আয়ুর্দ্দেহি যশো দেহি ভাগ্যং ভগবতি দেহি মে। পুত্রান্ দেহি ধনং দেহি সর্ব্বান্ কামাশ্চ দেহি মে।।
প্রণামমন্ত্র –
সর্বমঙ্গলমঙ্গল্যে শিবে সর্বাথসাধিকে।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী নারায়ণি নমোস্তু তে।।
অষ্টমী মন্ত্রের প্রথম অংশ –
- নমঃ মহিষগ্নি মহামায়ে চামুণ্ডে মুণ্ডমালিনী। আয়ুরারোগ্য বিজয়ং দেহি দেবী নমোস্তুতে।।
প্রণামমন্ত্র –
জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী।
দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোস্তু তে।।
নবমী মন্ত্রের প্রথম অংশ –
- কালী কালী মহাকালী কালিকে কালরাত্রিকে। ধর্মকামপ্রদে দেবি নারায়ণি নমোস্তু তে।।
প্রণামমন্ত্র – সর্বস্বরূপে সবর্বেশে সর্বশক্তিসমন্বিতে।
ভয়েভ্যস্ত্রাহি নো দেবি দুর্গে দেবি নমোস্তু তে।।
তবে এর সঙ্গে অনেক পুরোহিত চণ্ডীর ভিন্ন ভিন্ন শ্লোক মন্ত্র হিসেবে অনেক সময়ে তুলে আনেন।