www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

April 20, 2025 4:13 am

রামায়ণ ও মহাভারত বিশ্বের প্রাচীনতম দুটি মহাকাব্য। সেই মহাকাব্যের মধ্যেই ধরা আছে সেই যুগের সামাজিক রীতি, নীতি ও সংস্কার।

রামায়ণ ও মহাভারত বিশ্বের প্রাচীনতম দুটি মহাকাব্য। সেই মহাকাব্যের মধ্যেই ধরা আছে সেই যুগের সামাজিক রীতি, নীতি ও সংস্কার। দেখা যায়, বর্ণবিদ্বেষ সেই মহাভারতের যুগে ছিল চরম। আর সেই বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েছিলেন বীর একলব্য। আমাদের আজকের বিষয় -‘একলব্য’।

দ্রোনচার্য ছিলেন কৌরব ও পাণ্ডবদের অস্ত্রগুরু। অর্জুন ছিল তার অতি প্ৰিয় শিষ্য। তিনি অর্জুনকে কথা দিয়েছিলেন যে তার মতো ধনুর্ধর বিশ্বে আর কেউ থাকবে না। এখানে থেকে শুরু একলব্যের প্রতি অবিচারের কাহিনী। একলব্য চেয়েছিলেন দ্রোনাচার্যের কাছ থেকে অস্ত্রবিদ্যা শিখতে। কিন্তু অন্তজ সন্তান একলব্যকে অস্ত্র শিক্ষা দিতে রাজি নয় দ্রোন। মহাভারতে আছে, একদা নিষাদরাজ হিরণ্যধনুর পুত্র একলব্য দ্রোণের কাছে এলেন।কিন্তু সে অস্পৃশ্য , ম্লেচ্ছ জাতি, সাধারণের সতীর্থ ও সমতুল্য হয়, এটা নিতান্ত অনভিপ্রেত, একথা বিবেচনা করে দ্রোণ তাকে ধনুর্বেদে দিক্ষিত করলেন না।“

এর পরেই শুরু হলো মূল কাহিনী। কাহিনীটি হলো, একদিন কৌরব-পাণ্ডব (Pandav) ভাইয়েরা শিকার করার জন্য বনে গমন করেন। মৃগয়ার জন্য একটি কুকুরও সাথে নিয়েছিলেন তারা। সেই কুকুরটি একটি হরিণকে অনুসরণ করতে করতে নিষাদপুত্র একলব্যের কাছে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং একলব্যকে দেখে সে জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকে। তখন একলব্য একসাথে সাতটি তীর সেই কুকুরটির মুখের ভেতর নিক্ষেপ করেন। কুকুরটি সেই অবস্থায় পাণ্ডবদের কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়। কুকুরটির কিন্তু শরীরে কোনো আঘাত লাগে নি। এমন অস্ত্রবিদ্যা তো অর্জুন শেখে নি। তখন অর্জুন সেই বনে সেই পুরুষের কাছে গিয়ে তার পরিচয় জানতে চাইলে, সেই পুরুষ বলেন, “আমি নিষাদপতি হিরন্যধনুর পুত্র, দ্রোণের শিষ্য, এই আশ্রমে একাই ধনুর্বেদ অনুশীলন করছি!”

একজন নিষাদ জাতির পুত্র এমন শব্দভেদি বাণ শিক্ষা দেখে ক্ষুব্ধ অর্জুন গুরু ড্রোনাচার্যের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানায় ও গুরুকে স্মরণ করিয়ে দেয় তার প্রতিশ্রুতি। এর পরেই ঘটে এক নির্মম বর্ণ বিদ্বেষী কাজ।

অর্জুনের (Arjun) কথা শুনে, অর্জুনকে সাথে নিয়ে দ্রোণ সেই বনে গিয়ে উপস্থিত হন। দ্রোণ সেখানে দেখতে পান নিষাদপুত্র একলব্যকে (Eklavya)। দ্রোনকে দেখে একলব্য দ্রুত তাঁকে প্রণাম করেন। একলব্য বলেন, তিনি তাঁরই শিষ্য। গুরুর মূর্তি বানিয়ে তাঁর সামনে অস্ত্র শিক্ষা করছে। স্তম্ভিত হয়ে জান দ্রোনা। অর্জুনের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি একলব্যের কাছ থেকে গুরু দক্ষিণা হিসাবে একলব্যের ডান হাতের বুড়ো আঙুল চান। একলব্য মুহূর্তে তাই দান করেন।
গুরুদক্ষিণার নামে দ্রোণের ছলের কাছে খুন হল একলব্যের প্রতিভা, তার ভবিষ্যৎ। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একলব্যের আঙ্গুল যদি সেদিন না কাটানো হত, তবে কে হত শ্রেষ্ঠ ধনুর্ধর?

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *