‘পুরান’ হলো প্রাচীন ভারতের ধৰ্মীয় সংস্কৃতির আয়না। মানুষের সাংসারিক ও সামাজিক জীবন সুখের করার জন্য শিব পুরানে আছে বিশেষ কিছু উপদেশ। শিব পুরাণে শিবের মহিমা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই পুরাণে শিব ও তাঁর অবতার, শিব ভক্তি, শিব মহিমা ও শিবের সম্পূর্ণ জীবন চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি এই পুরাণে জ্ঞান, মোক্ষ, ব্রত, তপ, জপ ইত্যাদির ফলাফলের মহিমাও বর্ণনা করা হয়েছে। শিব পুরানে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে –
- ধন সংগ্রহ
শিব পুরাণ অনুযায়ী সঠিক পথে ধন উপার্জন করুন। তার পর সেই ধনকে তিন ভাগে ভাগ করা উচিত। এর একটি অংশ ধন বৃদ্ধি অর্থাৎ সঞ্চয়, দ্বিতীয় অংশ উপভোগ ও তৃতীয় অংশ ধর্ম-কর্মের কাজে ব্যয় করা উচিত। এর ফলে জীবনে সাফল্য লাভ করতে পারবেন।
- রাগ ত্যাগ করুন
এই পুরাণ অনুযায়ী রাগ করতে নেই ও রাগ উৎপন্ন করতে পারে এমন কোনও কথাও বলতে নেই। রাগ করলে বিবেক নষ্ট হয়। আবার বিবেক নষ্ট হলে জীবনে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।
- ভোজন ত্যাগ
শিবরাত্রির উপবাস করলে ব্যক্তি ভোগ ও মোক্ষ উভয় লাভ করতে পারে। এর ফলে মহান পুণ্য পাওয়া যায়। পুণ্যকর্ম করলে ভাগ্যোদয় হয় এবং ব্যক্তি সুখ লাভ করতে পারে।
- সন্ধ্যাকাল
সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময় শিবের। এ সময় তিনি নিজের তৃতীয় নেত্র দিয়ে ত্রিলোককে দেখে থাকেন এবং নন্দী ও গণেদের সঙ্গে ভ্রমণ করেন। এ সময় যে ব্যক্তি কটূ বচন বলে, কলহ ও রাগ করে, সহবাস, ভোজন যাত্রা বা কোনও পাপ কর্ম করে, তাঁদের অহিত হয় বলে শিব পুরাণে উল্লেখ পাওয়া যায়।
- সত্য বলুন
সত্য বলা ও সত্যকে সমর্থন করা ব্যক্তির সবচেয়ে বড় ধর্ম। অসত্য় বলা এবং অসত্যকে সমর্থন করা সবচেয়ে বড় অধর্ম।
- নিষ্কাম কর্ম
যে কোনও কাজ করার সময় ব্যক্তি কী করছে, তার জন্য নিজেকে তার সাক্ষী হিসেবে রাখা উচিত। ভালো-মন্দ সমস্ত কাজের জন্য ব্যক্তিই দায়ী। এমন কখনও মনে করা উচিত নয় যে, তার কাজ কেউ দেখছে না। আসলে ব্যক্তির সমস্ত কাজই ঈশ্বর দেখতে পান। মনে এমন অনুভূতি রাখলে, সেই ব্যক্তি পাপ কর্মে লিপ্ত হতে পারবে না। মন, বাণী ও কর্মের মাধ্যমে ব্যক্তিকে পাপ কর্ম করা উচিত নয়।