পাকিস্তানে এক সময় বহু হিন্দু মন্দির ভেঙে দিয়েছিলো উগ্র মৌলবাদীরা। কিন্তু কোনো অজ্ঞাত কারণে কয়েকটি মন্দির ভাঙার সাহস তারা পায় নি। তারমধ্যে অন্যতম হলো এই মন্দিরটি। ৫১টি শক্তিপীঠের অন্যতম মরুতীর্থ হিংলাজ মাতার মন্দির হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র ধর্মীয় স্থল। করাচি থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশের অন্তর্গত এই মন্দিরকে ঘিরে প্রচলিত রয়েছে নানা মিথ। যার ছত্রে ছত্রে লুকিয়ে রহস্য। সেই রহস্যের টানে দুর্গম এই মন্দিরে পাড়ি জমান দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। এই মন্দিরকে নিয়ে মহানায়ক উত্তমকুমার ও বিকাশ রায় অভিনিত সিনেমা সুপার-ডুপার হিট হয়। গুহাবেষ্টিত এই মন্দিরে পৌঁছতে হয় বিপদসঙ্কুল পথ ধরে। হিংগল নদীর ধার ঘেঁষে লায়ারি তেহশিলের পার্বত্য এলাকা পেরিয়ে পৌঁছতে হয় হিংলাজ মাতার শরণে।
পুরাণ মতে শক্তির দেবী হিংলাজ ভক্তদের সব মনোবাঞ্ছা পুরণ করেন। সাধারণ এই মন্দিরে গুজরাত ও রাজস্থানের পুণ্যার্থীদের ভিড় হয় সবচেয়ে বেশি। পুরাণ মতে, দক্ষযজ্ঞের পর পাকিস্তানের এই অঞ্চলেই নাকি সতীর মাথার অংশ পড়েছিল। তাই এই স্থানকে ৫১ সতীপীঠের একটি বলে ধরা হয়।
হিংলাজ মাতার মন্দিরে পৌঁছে বেশ কয়েক ধাপে আরাধনায় মত্ত হন পুণ্যার্থীরা। বাবা চন্দ্রগুপের (মাড ভলরকানো) কাছে উঠে দেবীর কাছে নিজেদের মনোবাঞ্ছা জানান পুণ্যার্থীরা। গায়ে কাদা মেখে নেন তাঁরা। তারপর হিংগল নদীতে নেমে পবিত্র স্নান করে শুদ্ধ হন পুণ্যার্থীরা। পুরাণ মতে, লঙ্কার অধিপতি রাবণকে হত্যা করার পর আত্মশুদ্ধির জন্য উতলা হয়ে ওঠেন শ্রী রামচন্দ্র। কারও পরামর্শে তিনি সীতা, লক্ষ্মণ ও শ্রী হনুমানকে নিয়ে হিংলাজ মাতার মন্দিরের দিকে আগুয়ান হয়েছিলেন। যদিও দীর্ঘ ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে রামচন্দ্র এই মন্দিরে পৌছতে পেরেছিলেন বলেও মনে করা হয়।