মহাভারত থেকে আমরা জানতে পারে, বনবাস কালে পঞ্চপাণ্ডব সহ দ্রৌপদীর তৃষ্ণা মেটানোর জন্য ধর্মরাজের দশ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন স্বয়ং যুধিষ্টির। তিনি তাঁর সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ভাইদের প্রাণ ফিরিয়ে এনেছিলেন ও তৃষ্ণার জল নিয়েছিলেন। আজকে আমরা সেই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো একবার দেখে নেবো।
*প্রশ্ন – কিভাবে কোনো ব্যক্তি জ্ঞান অর্জন করতে পারে? কিভাবে সে মহৎ হতে পারে?
*উত্তর – বেদ অধ্যয়ন করে একজন ব্যক্তি জ্ঞান অর্জন করতে পারে। সাধুসুলভ ব্রহ্মচর্য অবলম্বন করে সে মহৎ হতে পারে।
*প্রশ্ন – ব্রাহ্মণদের দেবত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় কিসে? ব্রাহ্মণের গুণ কী?
*উত্তর – বেদ অধ্যয়ন ব্রাহ্মণদের মধ্যে দেবত্ব প্রতিষ্ঠা করে। ব্রহ্মচর্য ব্রাহ্মণের গুণ।
*প্রশ্ন – কে পৃথিবীর চেয়েও ভারী? কে স্বর্গের চেয়েও উঁচু? কে বায়ুর চেয়েও দ্রুতগামী? ঘাসের চেয়েও সংখ্যায় বেশি কী?
*উত্তর – মা পৃথিবীর চেয়েও ভারী। বাবা স্বর্গের চেয়েও উঁচু। মন বায়ুর চেয়েও দ্রুতগামী। দুশ্চিন্তা ঘাসের চেয়েও সংখ্যায় বেশি।
*প্রশ্ন – ধর্মের সর্বোচ্চ আশ্রয় কী?
- উত্তর – ঔদার্য ধর্মের সর্বোচ্চ আশ্রয়।
*প্রশ্ন – সকল প্রশংসনীয় বস্তুর মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রশংসনীয় কোনটি? সকল ধনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ধন কোনটি?
*উত্তর – দক্ষতা সকল প্রশংসনীয় বস্তুর মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রশংসনীয়। বিদ্যা সকল ধনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ধন।
*প্রশ্ন – পৃথিবীতে পরম ধর্ম কী?
*উত্তর – আঘাত না করাই পরম ধর্ম।
*প্রশ্ন – কোন শত্রু অপরাজেয়?
- উত্তর – রাগ হল অপরাজেয় শত্রু।
*প্রশ্ন – হে রাজা, মোহ কী? গর্ব কী?
*উত্তর – নিজের কর্তব্যকে না জানার নাম মোহ। নিজের কথা বেশি ভাবাই গর্ব।
*প্রশ্ন – ঋষিরা কাকে স্থৈর্য বলেছেন? সাহস কী?
*উত্তর – নিজ কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করার নামই স্থৈর্য। ইন্দ্রিয়জয়ই সত্যকারের সাহস।
*প্রশ্ন – হে রাজা , জন্ম, কাজ, অধ্যয়ন বা শাস্ত্রপাঠ-শ্রবণ–এর মধ্যে কোনটির দ্বারা কোনো ব্যক্তি ব্রাহ্মণত্ব অর্জন করতে পারে?
*উত্তর – হে যক্ষ, শোনো! জন্ম, অধ্যয়ন বা শাস্ত্রপাঠ-শ্রবণ–কোনোটিই ব্রাহ্মণত্ব লাভের পন্থা নয়। নিঃসন্দেহে বলা চলে, কাজের মাধ্যমেই মানুষ ব্রাহ্মণ হতে পারে।