দোলের আগের দিন সর্বত্র হয় ন্যাড়া পোড়া – যাকে অনেক জায়গায় হোলিকা দহন বলা হয়। বাংলায় প্রচলিত ছাড়া – ‘আজ আমাদের ন্যাড়া পোড়া কাল আমাদের দোল, পূর্ণিমাতে চাঁদ উঠেছে বলো হরিবোল’। কিন্তু কেন এই ন্যাড়া পোড়া। সেই নিয়েই আছে পুরানে এক কিংবদন্তি। ন্যাড়াপোড়ার সঙ্গে যোগ রয়েছে বিষ্ণুর চতুর্থ অবতার নরসিংহের। রাক্ষস রাজ ছিলেন হিরণ্যকশিপ। বিশাল পরাক্রমী সে রাজার দু-চক্ষের বিষ ছিলেন ভগবান বিষ্ণু। এদিকে সেই রাক্ষস রাজার পুত্র প্রহ্লাদ সেই সময়ের সবচেয়ে বড় বিষ্ণুভক্ত।
সারাদিন বিষ্ণু নামে ব্যস্ত থাকতেন প্রহ্লাদ। যা তার পিতার কাছে ছিল চরম বিরক্তির কারণ। তাই রাগের বশে নিজের পুত্রকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন হিরণ্যকশিপ। এক্ষেত্রে নিজের বোন হোলিকাকে সেই কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব দেন তিনি। হোলিকা ব্রহ্মার কাছ থেকে একটি শাল বর পেয়েছিলেন। যেই শাল আগুন, জল সব রকমের বিপদের হাত থেকে রক্ষা করত হোলিকাকে। সেই মতো শালের ভরসায় প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনের মধ্যে বসে পড়েন হোলিকা। কিন্তু আগুনে প্রবেশ করতেই সেই শাল গিয়ে পড়ে প্রহ্লাদের গায়ে, আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় হোলিকা। এই থেকে শুরু হোলিকা দহন প্রথা। যদিও হোলিকা দহনের আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে। হোলিকা দহনের হল অশুভ শক্তির বিনাশ। ন্যাড়া পোড়ার অর্থও একই। ন্যাড়া পোড়া হল মন্দের উপর ভালর জয়ের প্রতীক।