www.machinnamasta.in

ওঁ শ্রীং হ্রীং ক্লী গং গণপতয়ে বর বরদ সর্বজনস্ময়ী বশমানয় ঠঃ ঠঃ

April 20, 2025 8:26 am

প্রথমে এ কথা বলে রাখা ভালো যে কবি জীবনানন্দ যেভাবে প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে নিজের মুক্তি খুঁজেছেন, সেভাবে তিনি কখনো মঠ-মন্দিরে ঈশ্বরের সন্ধান করেন নি।

প্রথমে এ কথা বলে রাখা ভালো যে কবি জীবনানন্দ যেভাবে প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে নিজের মুক্তি খুঁজেছেন, সেভাবে তিনি কখনো মঠ-মন্দিরে ঈশ্বরের সন্ধান করেন নি। তাই বলে তিনি কিন্তু নাস্তিক নন। তাঁর মনের গভীরে ছিল ঈশ্বর বিশ্বাস। তাঁর জন্ম এক ব্রাহ্মধর্ম পরিবারে – যারা মূলত একেশ্বরবাদের চিন্তা ধারণ করতেন। তবে হিন্দুদের মতো দেব-দেবীর পূজা করতেন না। সব ধর্মের প্রতি ছিল ব্রাহ্মদের শ্রদ্ধা। আর এই সর্বধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহনশীলতা তথা হিন্দু-মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের সম্প্রীতি দেখেই জীবনানন্দ বেড়ে উঠেছেন। মূলত অগ্রসর ও আধুনিক এক ব্রাহ্মপরিবারের ভিতর বেড়ে উঠেছিলেন শৈশব-কৈশরের জীবনানন্দ দাশ।

প্রথাগত ধর্ম নয়, আনুষ্ঠানিক ধর্ম নয়, তিনি মনে করতেন – নীতিকে ধর্ম মনে করতে পারলে এবং পৃথিবীকে সেই হিসেবে মোটামুটি ধার্মিক দেখতে পারলে তৃপ্তি বোধ করা যায়। কিন্তু বিশ্বাসী ধর্মাশ্রয়ীরা কেবলমাত্র নীতি ও যুক্তিকে ধর্ম বলে মনে করেন না। তাদের মতে, এগুলো বাদ দিয়েও ধর্ম চলে। তাঁরা মনে করেন, ধর্ম সাধনায় এমন কোনো চৈতন্যের দরকার নেই যার ফলে বিশ্বাস জন্মাবার আগে যুক্তি ও জিজ্ঞাসার জন্ম হয়। ‘যুক্তি জিজ্ঞাসা ও বাঙালী’ প্রবন্ধে জীবনানন্দ লিখেছেন, ‘যারা অশিক্ষিত আধা-শিক্ষিত তারাই শুধু নয়, অনেক সুশিক্ষিত বুদ্ধিমান লোকও ভক্তিকেই ধর্ম মনে করেন—অন্ধ ভক্তিকেও।’

‘দেশ কাল সন্তুতি’ কবিতায় সেই খেদোক্তি প্রকাশ পেয়েছে –
‘এক পৃথিবীর ধর্ম নষ্ট হয়ে গেছে,
অন্য এক পৃথিবীর বুদ্ধি ক্ষয়ের সন্ধানে;
ইতিহাস কোনোদিনই নির্দোষ নয়;
কাজ করে চলেছে সজ্ঞানে।’ আবার ‘রূপসী বাংলা’ কাব্যের একটা কবিতায় তিনি লিখলেন –
‘জানি না ঈশ্বর কে বা,
জানি শুধু ভুখা ভগবান,
দিনগত পাপ ক্ষয় করে পাব ত্রাণ;
তারপর একদিন নিমতলা ঘাটে কিংবা
কাশী মিত্রের তল্লাটে পড়ে রব।’

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *