শনিবার শনিদেবকে উৎসর্গ করা হয়। শনিদেব ব্যক্তিকে তার কর্মের ভিত্তিতে শাস্তি দেন। শনির নেতিবাচক প্রভাবের কারণে মানুষকে অনেক সমস্যা ও ঝামেলায় পড়তে হয়। বৈদিক শাস্ত্রে মানুষকে শনিদেবের কু-প্রভাব দূর করার অনেক উপায় বলা হয়েছে। বৈদিক শাস্ত্রে মানুষকে শনিদেবের কু-প্রভাব দূর করার অনেক উপায় বলা হয়েছে। পিপল পাতার মালা অর্পণ করার সময় ‘ওম শ্রী শ্রী শন শনাইশ্চরায় নমঃ’ মন্ত্রটি ২১ বার জপ করুন। এতে করে শনিদেবের কৃপায় আদালতের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হবে।
শনিদেবের (Shani Dev) কথা শুনলেই মানুষের মনের মধ্যে এক অন্য ভীতির তোলপার ঘটে। জীবনে শুভ ও পজিটিভ শক্তির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে শনির কুনজরই যথেষ্ট। শনিবারের সঙ্গে শনিদেবের সরাসরি যোগ রয়েছে। তবে শনিদেব যে সবসময়ই কুদৃষ্টি প্রভাবকে বিস্তারিত করে, তা নয়, বড়ঠাকুরের কৃপা পেতে ও শুভ উপকার পেতে বেশ কিছু প্রতিকার মেনে চলা উচিত। তাতেই জীবন হয়ে ওঠে শুভ ও পজিটিভিটিতে ভরপুর। শনির সাড়ে সাতি দশা বা মহাদশার প্রভাব থাকলে মানুষের জীবন একেবারে সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ওঠে। তাই শনিদেবের বিশেষ আচার মেনে পুজো করলে বিশেষ ফল পাওয়া যায়। শনিবার শনিগ্রহের সঙ্গে শনিদেবকে উত্সর্গ করা হয়। তাই শনিবার শনিবার শনিদেবকে পুজো করার রীতি রয়েছে। শাস্ত্র অনুযায়ী, শনিদেবকে হিন্দুদের ন্যায়ের দেবতাও বলা হয়। এ দিনে ভক্তরা শনিদেবকে তুষ্ট করতে বিশেষ নিয়ম মেনে পুজো করার চল রয়েছে। বিশ্বাস করা হয়, শনিদেবকে প্রসন্ন করতে পারলে জীবনে সুখ , শান্তি-সমৃদ্ধি বজায় থাকে।

শনিদেবকে পুজো করলে শুভ ফল পাওয়া যায়
শনিদেবকে ন্যায়ের দেবতা বলা হয়, তাই শনিদেব মানুষের কর্ম অনুসারে ফল প্রদান করে থাকেন। যে ব্যক্তি ভাল কাজ করেন তাঁকে শনিদেব আশীর্বাদ (Astrology) বর্ষণ করে থাকেন। আর যাঁরা বাজে ও খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাহলে তিনি নিজের কর্ম ফল পেতে থাকেন। বিশ্বাস করা হয় যে শনিদেব প্রসন্ন হলে ভক্তদের সব সমস্যা নিমিষেই দূর হয়ে যায়। যদি শনিদেব কোনওভাবে রুষ্ট হন, তাহলে রাজা বা ধনীব্যক্তিকে রাস্তার কাঙাল করে দিতেও সক্ষম হন শনিদেব। মনে করা হয়, শনিদেবের অশুভ নজর যদি কোনও ব্যক্তির উপর পড়ে, তাহলে তাঁর জীবনে সমস্যা পাহাড় দেখা যায়। প্রতিটি পদক্ষেপে সমস্যায় পড়তে হয়। শনিদেবের কৃপা ও শুভ আশীর্বাদে যে কোনও ব্যক্তির জীবনে সাফল্যের দ্বার খুলে যায়।
শনিবার মানুন এই ‘বিশেষ’ টোটকা
শনিদেবের সঙ্গে হনুমানজির (Hanuman) পুজো ও শনিবার উপবাস করলে বড়ঠাকুর খুব প্রসন্ন হন। এদিন সুন্দরকাণ্ড ও বজরংবান পাঠ করলে জীবনের সব ঝুটঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়। শনিবার বিভূতি, চন্দন বা ভস্ম প্রয়োগ করলে ভোলেবাবাও তুষ্ট হন।
শনিবার (Saturday) শনিদেবকে (Shani Dev) তুষ্ট করতে বিশেষ টোটকা হল, একটি কালো কুকুর বা কালো গরুকে রুটি খাওয়ানো অত্যন্ত শুভ প্রতিকার বলে মনে করা হয়। এই টোটকা প্রতি শনিবার মেনেন চললে জীবনের প্রতিবন্ধকতাও দূর হয়ে যায়। এছাড়াও শনিবার কালো পিঁপড়ে ও কালো পাখি বা কাককে খাবার বা শস্যদানা খাওয়ানোও পজিটিভ শক্তি ও শুভ ফল পাওয়া যায়। অশুভ (Spirituality) দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়ার জন্যও এই প্রতিকার মেনে চলতে পারেন।
শনিবারে শনি ঠাকুরকে সহজে প্রসন্ন করা সম্ভব। শনিবারে এই দশ কাজ করলে শনিদেবকে নিশ্চিত ভাবে তুষ্ট করতে পারবেন আপনি। শনি প্রসন্ন হলে সাড়ে সাতি (Sare Sati) ও ধাইয়ার অশুভ প্রভাব থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। এর ফলে আপনার জীবন সাফল্য ও আনন্দে ভরে ওঠে। শনি (Spiritual) নিজেই তাঁর ভক্তদের সব বিপদ থেকে রক্ষা করেন।
জেনে নিন শনিবারে শনিকে খুশি করার সহজ ১০ উপায়
* শনিবার সকালে অশ্বত্থ গাছে জল নিবেদন করুন।
* শনিবার সন্ধেয় অশ্বত্থ গাছের গোড়ায় একটি সর্ষের তেলের প্রদীপ জ্বালান।
* শনিবারে অশ্বত্থ গাছের পুজো করলে তুষ্ট হল শনি দেবতা।
* শনিবারে শনি দেবতার মন্ত্র জপ করলে সাড়ে সাতি দশার সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
* শনিবারে অবশ্যই শনি চালিশা পাঠ করুন। এর ফলে সহজেই কর্মফলের দেবতাকে তুষ্ট করা সম্ভব।
* শনিবারে শনি ঠাকুরের পাশাপাশি হনুমান জির পুজো করাও অত্যন্ত শুভ। বজরংবলীর ভক্তদের কখনও কষ্ট দেন না শনি। তাই শনিবারে হনুমান পুজো করলে শনির দশা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
* শনিকে তুষ্ট করতে প্রতি শনিবার সুন্দরখণ্ড পাঠ করুন।
* এই দিনে কালো ডাল, কালো ছাতা, কালো জুতো, কালো চটি, কালো কম্বল দান করুন। এর ফলে প্রসন্ন হন শনি।
* শনিবার সন্ধেয় একটি সর্ষের তেলের প্রদীপে কয়েক দানা তিল দিয়ে সেটি কোনও অশ্বত্থ গাছের নীচে জ্বালিয়ে আসুন।
* শনিবারে কালো কুকুরকে রুটি খাওয়ান। এর ফলে অবশ্যই তুষ্ট হবেন শনি দেব।
মনে করা হয় পায়ে কালো সুতো বাঁধা থাকলে শনির দশা, শনির সাড়ে সাতি এবং ধাইয়ার ক্ষতিকর প্রভাব অনেকটাই কমানো যায়। এর পাশাপাশি কালো সুতোর প্রভাবে দুই অশুভ ছায়া গ্রহ রাহু ও কেতুর ক্ষতিকর প্রভাবও কমানো যায়। এর ফলে আর্থিক ভাবে খারাপ অবস্থাও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়।
তবে মনে রাখবেন পায়ে কালো সুতো কেবলমাত্র মঙ্গলবার ও শনিবারেই বাঁধবেন। অন্য কোনও দিনে পায়ে কালো ধাগা বাঁধবেন না। এই দুটি দিনই শনি দেবতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। সেই কারণে কেবলমাত্র এই দুই দিনে পায়ে কালো সুতো বাঁধলে শনির আশীর্বাদ লাভ করা যায়। এর ফলে গ্রহরাজের কৃপায় জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি লাভ করা যায়।
পুরুষরা নিজেদের ডান পায়ে কালো সুতো বাঁধুন এবং মহিলারা নিজেদের বাঁ পায়ের গোড়ালিতে কালো সুতো বাঁধতে পারেন। এর ফলে অশুভ প্রভাব দূর হয়ে জীবনে ফিরবে সুখ ও শান্তি। তবে একটা কথা মাথায় রাখবেন, মেষ ও বৃশ্চিক রাশির জাতকরা ভুলেও পায়ে কালো সুতো বাঁধবেন না। কারণ এই দুই রাশির গ্রহ অধিপতি হল মঙ্গল এবং মঙ্গল দেব কালো রং অপছন্দ করেন। তাই এই দুই রাশির জাতকরা পায়ে কালো সুতো বাঁধলে মঙ্গলের রোষের মুখে পড়তে পারেন।