শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ নয়, এমন মানুষদের আমরা প্রতিবান্ধী বলি। সেই প্রতিবান্ধী মানুষেরা আমাদের সমাজের একটা অংশ। তাদের প্রতি সকলের সহমর্মিতা জাগনোর জন্যই ৩ ডিসেম্বরকে বিশ্ব প্রতিবান্ধী দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৯২ সাল থেকে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে। শারীরিকভাবে অসম্পূর্ণ মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগিতা প্রদর্শন ও তাদের কর্মকান্ডের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই এই দিবসটির সূচনা। এই দিবস পালনের মধ্য দিয়ে মানুষের মনের গভীরে থাকা প্রকৃত মানবতাকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করার জন্যই এই দিবস পালন করা হয়।
১৯৯২ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী প্রতিবান্ধী দিবস পালন শুরু হলেও এই উৎসে আছে ১৯৫৮ সালে বেলজিয়ামের এক খানি দুর্ঘটনা। ওই বছর বেলজিমে এক মর্মান্তিক খনি দুর্ঘটনায় বহু মানুষ মারা যান আর আহত হয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান আরও অনেক মানুষ। তারা তো নিজেদের কারণে পঙ্গু হয় নি। হয়েছে দেশের কাজে। সেই থেকেই বিভিন্ন সংগঠন সেই প্রতিবান্ধী মানুষদের সুস্থ করে তোলার জন্য শুরু করে এক আন্দোলন। সেই আন্দোলেন দেশের সীমা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। এর ঠিক পরের বছর জুরিখে বিশ্বের বহু সংগঠন সম্মিলিত ভাবে আন্তর্দেশীয় স্তরে এক বিশাল সম্মেলন করেন। সেখান থেকেই প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে বিস্তারিত সব তথ্যের হদিশ মেলে। সেখানে সর্বসম্মতভাবে প্রতিবন্ধী কল্যাণে বেশকিছু প্রস্তাব ও কর্মসূচি গৃহীত হয়। খনি দুর্ঘটনায় আহত বিপন্ন প্রতিবন্ধীদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস পালন করতে আহ্বান জানানো হয়। এর পরেই জাতিসংঘে এই নিয়ে প্রস্তাব তোলা হয়। আর দীর্ঘ আলোচনার পরে জাতিসংঘ ৩ ডিসেম্বরকে প্রতিবান্ধী দিবস ঘোষণা করেন। জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী পতাকা গৃহীত হয়।